অনুচ্ছেদ : দেশপ্রেম বা স্বদেশপ্রেম (সহজ ভাষায় ছোট রচনা)

 

দেশপ্রেম 

অনুচ্ছেদ দেশপ্রেম বা স্বদেশপ্রেম

দেশপ্রেম বা স্বদেশপ্রেম বলতে বোঝায় নিজের জন্মভূমিকে ভালোবাসা। এটা মানবজীবনের একটা সহজাত গুণ। জন্মসূত্রে দেশের সঙ্গেই গড়ে ওঠে মানুষের নাড়ির যোগ। স্বদেশের জন্যে তার মনে জন্ম নেয় নিবিড় ভালোবাসা। এই অনন্য ভালোবাসাই হচ্ছে স্বদেশপ্রেম। জন্মভূমির মাটি, আলো-বাতাস, অন্ন-জলের প্রতি মানুষের মমত্ব অপরিসীম। স্বদেশের ভৌগোলিক ও সামাজিক পরিবেশের প্রতি থাকে তার এক ধরনের আবেগময় অনুরাগ। জন্মভূমির ভাষা, সাহিত্য, সংস্কৃতি, ঐতিহ্যের সঙ্গে গড়ে ওঠে তার শেকড়ের বন্ধন। স্বদেশের প্রকৃতি ও মানুষের প্রতি এই অনুরাগ ও বন্ধনের নাম স্বদেশপ্রেম। মা, মাতৃভূমি আর মাতৃভাষার প্রতি গভীর ভালোবাসার আবেগময় প্রকাশ ঘটে স্বদেশপ্রেমের মধ্যে। স্বদেশপ্রেম মানুষের অন্তরে সদা বহমান থাকে। বিশেষ সময়ে, বিশেষ বিশেষ পরিস্থিতিতে তা আবেগ-উদ্বেল হয়ে ওঠে। ব্রিটিশ শাসনামলে রবীন্দ্রনাথ, নজরুল ও সুকান্তের দেশাত্মবোধক গানে-কবিতায় স্বদেশপ্রেমের আবেগময় প্রকাশ দেখা যায়। স্বদেশপ্রেম দেশ ও জাতির অগ্রগতির লক্ষ্যে জ্বলন্ত প্রেরণা হিসেবে কাজ করে। কেবল স্বাধীনতা অর্জন কিংবা স্বাধীনতা রক্ষার সংগ্রামেই দেশপ্রেম সীমাবদ্ধ থাকে না, দেশকে সমৃদ্ধিশালী করার মধ্যেও স্বদেশপ্রেমের অভিব্যক্তি প্রকাশ পায়। জ্ঞান-বিজ্ঞানের সাধনায়ও স্বদেশপ্রেমের বহিঃপ্রকাশ ঘটে। তবে অন্ধ স্বদেশপ্রেম উগ্র জাতীয়তাবাদের জন্য দেয়। তা জাতিতে জাতিতে সংঘাত ও সংকটের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। জার্মানিতে হিটলার ও ইতালিতে মুসোলিনি উগ্র জাতীয়তা ও অস্থ দেশপ্রেমের নগ্ন বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছিল। ফলে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে বিপন্ন হয়েছিল বিশ্বমানবতা। স্বদেশপ্রেম আসলে বিশ্বপ্রেমেরই একটি অংশ। দেশকে ভালোবেসে মানুষ বিশ্বকে ভালোবাসতে পারে। স্বদেশপ্রেমের ভেতর দিয়েই আমরা বিশ্বপ্রেমের সেতুবন্ধন রচনা করতে পারি।

দেশপ্রেম বা স্বদেশপ্রেম আরও একটি অনুচ্ছেদ

নিজের দেশকে, দেশের মানুষকে ভালোবাসাই হচ্ছে দেশপ্রেম। নিজের দেশকে ভালোবাসে না এমন কে আছে? দেশপ্রেম মানুষের স্বভাবজাত গুণ। সামাজিক মানুষের দেশের প্রতি গভীর মমত্ববোধই হলো দেশপ্রেম। মা, মাটি ও মানুষকে ভালোবাসার মধ্যেই দেশপ্রেমের মূল সত্য নিহিত। প্রত্যেক মানুষের দেহ মন বিশ্বাস আদর্শ সবকিছুই স্বদেশের বিভিন্ন উপাদান দ্বারা পুষ্ট। তাই সে দেশের ভাষা-সাহিত্য, ইতিহাস-ঐতিহ্য, সমাজ-সংস্কৃতি এবং জীবন ও পরিবেশকে ভালোবাসতে শুরু করে। এই ভালোবাসাই হচ্ছে দেশপ্রেম। শুধু মুখে মুখে এই ভালোবাসার কথা বললেই দেশপ্রেম হয় না। চিন্তায়, কথা ও কাজে দেশের জন্য যে ভালোবাসা প্রকাশ পায় সেটাই প্রকৃত দেশপ্রেম। ফলে স্বদেশের জন্যে তার যে প্রেম তা কৃতজ্ঞতার, কর্তব্যের এবং দায়িত্বের। প্রকৃত দেশপ্রেমিকের মধ্যে কোনো চিন্তা থাকে না। দেশের কল্যাণ ও সমৃদ্ধিই দেশপ্রেমিকের সর্বক্ষণের চিন্তা ও কর্মের বিষয়। দেশের স্বার্থকে তিনি সবকিছুর উর্ধে স্থান নিয়ে থাকেন। নিজের অহংকার, মেধা, প্রজা ও গৌরব স্বদেশের জন্য নিবেদন করেন। দেশের জন্য নিজেকে অকাতরে বিলিয়ে দিয়ে দেশের মর্যাদা রক্ষা করেন। যুগে যুগে অসংখ্য মনীধী দেশের মানুষের কল্যাণে নিজেদের জীবন উৎসর্গ করে বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করে গেছেন। ব্রিটিশবিরোধী স্বাধীনতার লড়াইয়ে জীবন দিয়েছেন তীতুমীর (Titumir), প্রীতিলতা (Pritilata Waddedar) ফাঁসির মঞ্চে জীবন উৎসর্গ করেছেন ক্ষুদিরাম ( Khudiram Bose), সূর্য সেন (Surya Sen) মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষার জন্য শহীদ, রফিক, বরকত, সালাম, জব্বার এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে আত্ম-বিসর্জিত করেছেন। অসংখ্য বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিক, ছাত্র-শিক্ষক, লক্ষ লক্ষ মা-বোন, মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী অকুতোভয় সৈনিকদের নাম শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করতে পারি। দেশপ্রেমের এমন দৃষ্টান্ত পৃথিবীর ইতিহাসে সত্যিই বিরল।


আরও একটি অনুচ্ছেদ : “দেশপ্রেম বা স্বদেশপ্রেম”

নিজের দেশকে, দেশের মানুষকে ভালোবাসাই হচ্ছে দেশপ্রেম। নিজের দেশকে ভালোবাসে না এমন কে আছে? দেশপ্রেম মানুষের স্বভাবজাত গুণ। সামাজিক মানুষের দেশের প্রতি গভীর মমত্ববোধই হল দেশপ্রেমের উৎস। মা, মাটি সমাজ ও মানুষকে ভালোবাসার মধ্যেই দেশপ্রেমের মূল সত্য নিহিত। প্রত্যেক মানুষের দেহ মন বিশ্বাস আদর্শ সবকিছুই দেশের বিভিন্ন উপাদান দ্বারা পুষ্ট। তাই সে দেশের ভাষা-সাহিত্য, ইতিহাস-ঐতিহ্য, সমাজ-সংস্কৃতি এবং জীবন ও উন্নয়নে বা পরিবেশকে ভালোবাসতে শুরু করে। এই ভালোবাসাই হচ্ছে দেশপ্রেম। শুধু মুখে মুখে এই ভালোবাসার কথা বললেই দেশপ্রেম হয় না। চিন্তায়, কথায় ও কাজে দেশের জন্য যে ভালোবাসা প্রকাশ পায় সেটাই প্রকৃত দেশপ্রেম। ফলে স্বদেশের জন্যে তার যে প্রেম তা কৃতজ্ঞতার, কর্তব্যের এবং দায়িত্বের। প্রকৃত দেশপ্রেমিকের মধ্যে কোনো সংকীর্ণ চিন্তা থাকে না। দেশের কল্যাণ ও সমৃদ্ধিই দেশপ্রেমিকের সর্বক্ষণের চিন্তা ও কর্মের বিষয়। দেশের স্বার্থকে তিনি সবকিছুর উর্ধ্বে স্থান দিয়ে থাকেন। নিজের অহংকার, মেধা, প্রজ্ঞা ও গৌরব স্বদেশের জন্য নিবেদন করেন। দেশের জন্য নিজেকে অকাতরে বিলিয়ে দিয়ে দেশের মর্যাদা রক্ষা করেন। যুগে যুগে অসংখ্য মনীষী দেশের মানুষের কল্যাণে নিজেদের জীবন উৎসর্গ করে বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করে গেছেন। ব্রিটিশ-বিরোধী স্বাধীনতার লড়াইয়ে জীবন দিয়েছেন তীতুমীর, প্রীতিলতা। ফাঁসির মঞ্চে জীবন উৎসর্গ করেছেন ক্ষুদিরাম, সূর্য সেন। মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষার জন্য শহীদ, রফিক, বরকত, সালাম, জব্বার এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সংগ্রামে আত্ম-বিসর্জিত অসংখ্য বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিক, ছাত্র-শিক্ষক, লক্ষ লক্ষ মা-বোন, মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী অকুতোভয় সৈনিকদের নাম শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করতে পারি। দেশপ্রেমের এমন দৃষ্টান্ত পৃথিবীর ইতিহাসে সত্যিই বিরল। মানুষ জীবনে যে কোনো সময়ে যে কোনো স্থান থেকে দেশকে ভালোবাসতে পারে। নিজ দায়িত্ব সুষ্ঠভাবে পালনের মধ্যে দেশপ্রেম নিহিত। যদিও আমরা জন্মের পরেই দেশকে ভালোবাসতে শুরু করি, তদুপরি ছাত্রজীবন দেশপ্রেমের প্রকৃষ্ট সময়। দেশপ্রেম হৃদয়ে থাকলে দেশের মাটি, মানুষ, প্রকৃতি সবকিছুই অতি আপন বলে মনে হয়। দেশকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য ছাত্ররাও নানাভাবে দেশের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করে দেশপ্রেমের পরিচয় দিতে পারে। স্বদেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হতে হলে মানুষকে ভালোবাসতে হবে। নিজের দৈন্যদশাকে তুচ্ছ করতে হবে এবং দেশ ও জাতির বৃহত্তর কল্যাণে নিজেকে উৎসর্গ করতে হবে। একটি মহৎ গুণ হিসেবে প্রত্যেক মানুষের মধ্যেই দেশপ্রেম থাকা উচিত। দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশ ও জাতির জন্য কিছু না কিছু অবদান রাখা প্রতিটি দেশপ্রেমিক নাগরিকের একান্ত দায়িত্ব ও কর্তব্য।

আরও পড়ুনঃ

Post a Comment

Previous Post Next Post