অনুচ্ছেদ : আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস বা শহিদ দিবস - সকল শ্রেণির জন্য।

এই আর্টিকেলে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস বা শহিদ দিবস অনুচ্ছেদ সকল শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য বাংলা ভাষায় লিখা হয়েছে। যেন সকল ছাত্রছাত্রীরা সহজে মনে রাখতে পারে এবং এটি পরিক্ষায় লিখে ভালো একটি ফলাফল অর্জন করতে পারে। আরও পড়ুন, অনুচ্ছেদ : দেশপ্রেম বা স্বদেশপ্রেম (সহজ ভাষায় ছোট রচনা)

অনুচ্ছেদ : আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস বা শহিদ দিবস

১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি ভাষাশহিদদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত হয় আমাদের মাতৃভাষা বাংলার মর্যাদা। তদানীন্তন পাকিস্তানের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের ভাষা ছিল বাংলা। কিন্তু পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী বাংলাকে বাদ দিয়ে উর্দুকে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা ঘোষণা দিলে শুরু হয় তীব্র ভাষা আন্দোলন। ২০শে ফেব্রুয়ারি থেকে ঢাকায় ১৪৪ ধারা জারি করে যাবতীয় মিছিল, মিটিং, শোভাযাত্রা নিষিদ্ধ করে দেওয়া হয়। আন্দোলনরত ছাত্রজনতা ২১শে ফ্রেব্রুয়ারি ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে রাজপথে নামে। মিছিলটি ঢাকা মেডিকেল কলেজের কাছাকাছি এলে সরকারের নির্দেশে পুলিশ গুলিবর্ষণ করে। এতে শহিদ হন সালাম, বরকত, রফিক, জব্বারসহ আরো অনেকে। ফলে আন্দোলন আরো বেগবান হয়, গর্জে ওঠে সমগ্র বাংলা। আতঙ্কিত হয়ে সরকার বাংলাকে অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দিতে বাধ্য হয়। এরপর থেকে শহিদদের স্মরণে প্রতিবছর ২১শে ফেব্রুয়ারি শহিদ দিবস হিসেবে পালিত হয়। রাষ্ট্রভাষা হিসেবে বাংলাকে ১৯৫৬ সালের সংবিধানের অন্তর্ভুক্ত করা হয়। জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি বিষয়ক সংস্থা ইউনেস্কোর সাধারণ অধিবেশনে ১৯৯৯ সালের ১৭ই নভেম্বর সর্বসম্মতভাবে গৃহত এক প্রস্তাবে বলা হয়, “১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশে মাতৃভাষার জন্যে অভূতপূর্ব আত্মত্যাগের স্বীকৃতি স্বরূপ এবং সেদিন যাঁরা প্রাণ দিয়েছিলেন তাঁদের স্মৃতির উদ্দেশে দিনটিকে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস' ঘোষণার প্রস্তাব করা হচ্ছে। " ১৯৯৯ সালের ১৭ই নভেম্বর ইউনেস্কোর ৩১তম সম্মেলনে ২১শে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালনের স্বীকৃতি পায়। ২০০১ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি সারা বিশ্বে প্রথম আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস' পালিত হয়। আজ একুশে ফেব্রুয়ারি কেবল আমাদের একার নয়, দেশকালের সীমানা ছাড়িয়ে বিশ্বের দেশে দেশে এ দিবসটি পালিত হয়। যে দিবসটি কেবল শহিদ দিবস হিসেবে পালিত হতো আজ তা 'আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস'।

শহিদ দিবস বা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস অনুচ্ছেদ আরেকবার দেয়া হলো

মা, মাতৃভাষা ও মাতৃভূমিকে ঘিরেই মানুষের আবেগ প্রকাশ পায়। বাঙালির এই আবেগ ও মমতার চূড়ান্ত প্রকাশ ঘটে ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি মাসে । মাতৃভাষা বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে ঠিক এইদিনেই বাঙালি সন্তানেরা প্রাণ বিসর্জন দিয়েছিল। আর এই দিনটিই বর্তমানে সারা বিশ্বে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালিত হচ্ছে। ১৭ই নভেম্বর ১৯৯৯ সালে জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সাংস্কৃতিক সংস্থা এর সদরদপ্তর ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে অনুষ্ঠিত বৈঠকে প্রত্যেক বছর একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালন করার সিদ্ধান্ত সর্বসম্মতভাবে গৃহীত করা হয়। ২০০০ সাল থেকে জাতিসংঘের সদস্য ১৮৮টি দেশে এই দিবসটি যথাযথ মর্যাদার সাথে পালিত হয়ে আসছে। এর মধ্য দিয়ে বিশ্বের প্রত্যেকটি মানুষ নিজ নিজ ভাষার প্রতি শ্রদ্ধাশীল হচ্ছে। আজ বাংলার গৌরব ও অহংকার আজ ছড়িয়ে পড়েছে পৃথিবীর সর্বত্র। প্রথম দিকে এই আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসটি ২১শে ফেব্রুয়ারি শহিদ দিবস হিসেবে পালিত হতো, তারপর পালিত হয় ভাষা দিবস হিসেবে। বাঙালির এই ত্যাগের ফলে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মানুষের ভাষাও গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত হচ্ছে। সব ভাষাই মূল্যবান, সব ভাষাই মানুষের ঐতিহ্য- এই চেতনার বিকাশ ঘটেছে মাতৃভাষার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও ভালবাসা হতে। মূলত নিজ নিজ মাতৃভাষার প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকাই হলো আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের তাৎপর্য।

 

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস অনুচ্ছেদ আরেকবার দেয়া হলো

একুশে ফেব্রুয়ারি বাঙালির জাতীর জীবনে এক গৌরবময় ও ঐতিহ্যবাহী দিন। বাঙালির জাতীর জীবনের সকল চেতনার উৎস হচ্ছে এ দিনটি। বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রীয় ভাষার মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত করার ঐতিহাসিক দিন হল এটি। ১৯৫২ এর ভাষা আন্দোলনের স্মৃতিবিজড়িত একুশে ফেব্রুয়ারিকে আমরা শহীদ দিবস হিসেবে পালন করি। একুশে ফেব্রুয়ারি বর্তমানে আর শুধু আমাদের মাতৃভাষা দিবস নয়। প্রতি বছর আমাদের একুশে ফেব্রুয়ারি সারা বিশ্বে পালিত হয় ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ হিসেবে। এ দিবসটির রয়েছে এক বিশাল ঐতিহাসিক পটভূমি। ১৯৪৮ সালে পাকিস্তানের গভর্নর জেনারেল মােহাম্মদ আলী জিন্নাহ ‘উর্দু ভাষাকে’ একমাত্র রাষ্ট্রভাষা হিসেবে ঘােষণা দেয়। তখন বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে শুরু হল তীব্র গণ-আন্দোলন। বাংলাকে রাষ্ট্রভাষার মর্যাদাদানে প্রত্যয়ী ছাত্রসমাজ ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে মিছিল বের করেছিল। মিছিল ঢাকা মেডিকেল কলেজের কাছাকাছি এলে সরকারের নির্দেশে পুলিশ মিছিলে নির্বিচারে গুলি চালিয়েছিল। এরই ফলসরুপ সালাম, বরকত, রফিক ও জব্বারসহ নাম না জানা অনেকে নিহত হয়েছিল। তারপর ক্রমাগত আন্দোলনের ফলে পাকিস্তান সরকার বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দিতে বাধ্য হয়। ১৯৫৬ সালের সংবিধানে সরকার বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেয়। ১৯৯৯ সালের ১৭ই নভেম্বর জাতিসংঘ ১৯৫২ সালের এই দিনের শহীদদের স্মৃতিকে সারা বিশ্বে স্মরণীয় করে রাখতে একুশে ফেব্রুয়ারিকে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত প্রকাশ করেন। তারই পরিপেক্ষিতে ২০০১ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি সারা বিশ্বব্যাপী প্রথম পালিত হল ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’। তাই ২১শে ফেব্রুয়ারি বাঙালির জাতীয় জীবনে এক গৌরবদীপ্ত ঐতিহাসিক দিন। আমাদের জাতীয় জীবনে এ দিনটির তাৎপর্য অপরিসীম। বুকের তাজা রক্ত ঝরিয়ে অর্জিত হয়েছে বাঙালির ভাষা ও সংস্কৃতির অধিকার। এ দিবসে প্রত্যেক ভাষার মানুষ নিজের মাতৃভাষাকে যেমন ভালােবাসবে তেমনি অন্য জাতির মাতৃভাষাকেও মর্যাদা দেবে। এভাবে একুশকে চেতনায় ধারণ করে মাতৃভাষাকে ভালোবাসার প্রেরণা পাবে মানুষ।

 

আরও পড়ুনঃ

পোস্ট ট্যাগ

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস অনুচ্ছেদ, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস অনুচ্ছেদ class 10, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস অনুচ্ছেদ রচনা, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস অনুচ্ছেদ class 9, অনুচ্ছেদ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস, অনুচ্ছেদ শহিদ দিবস,  অনুচ্ছেদ শহিদ দিবস।

Post a Comment

Previous Post Next Post