অনুচ্ছেদ: অমর একুশে গ্রন্থমেলা | একুশের বইমেলা

 

একুশের বইমেলা অনুচ্ছেদ

বা, অমর একুশে গ্রন্থমেলা

একুশে ফেব্রুয়ারি আমাদের জাতীয় জীবনে এক নবচেতনার দিন। ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারিতে মাতৃভাষা বাংলার মর্যাদা রক্ষার জন্যে সালাম, বরকত, রফিক, জব্বারসহ প্রাণ দিয়েছেন অনেকে। এই ভাষাশহিদদের স্মরণে প্রতি বছর ফেব্রুয়ারি মাসব্যাপী একুশের বইমেলা অনুষ্ঠিত হয়। শুরু থেকে মেলাটি দীর্ঘদিন ধরে বাংলা একাডেমির মাঠে অনুষ্ঠিত হতো। কিন্তু বাংলা একাডেমির মাঠে স্থানসংকুলান হয় না বলে বইমেলার একটি বিরাট অংশ 'সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে স্থানান্তরিত হয়েছে। এখন আর জায়গার অভাব নেই। বর্তমানে একুশের বইমেলা বিশাল বিস্তার লাভ করেছে। এ মেলায় ছোট বড় মিলিয়ে পাঁচ শতাধিক প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করে এবং মেলা চলে পয়লা ফেব্রুয়ারি থেকে ২৮ বা ২৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। এ সময়ের মধ্যে কবিতা, গল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ, ছড়া, নাটক, ভ্রমণকাহিনিসহ জ্ঞান-বিজ্ঞানের বিচিত্র বিষয় নিয়ে প্রকাশিত হয় হাজার হাজার নতুন বই। বুকস্টলগুলো মনোরম সাজে তৈরি করা হয়। প্রতিদিন নতুন নতুন বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয় নজরুল মঞ্চে। এসব বই কেনার জন্যে মেলায় হাজার হাজার গ্রন্থপ্রেমিক পাঠকের সমাবেশ ঘটে। মেলায় হাজির থাকেন অনেক লেখক। এ যেন পাঠক-লেখকের এক বিশাল মিলনমেলা। নবীন-প্রবীণ, শিশু- কিশোর, নারী-পুরুষ মিলে মেলাটি হয়ে ওঠে একটি বিশাল ফুলবাগানের মতো। এছাড়া থাকে আলোচনা সভা, সেমিনার, সাংস্কৃতিক আয়োজন। একুশের বইমেলাকে কেন্দ্র করে ঢাকা যেন একটি আনন্দ উৎসবের নগরীতে পরিণত হয়। বইপড়ার মাধ্যমে আমরা আনন্দের পাশাপাশি সত্য, সুন্দর, কল্যাণ, ন্যায়ের শাশ্বত রূপের সাথে পরিচিত হতে পারি। একঘণ্টার বইপড়ার মধ্য দিয়ে আমরা বিশ্বজগৎ ভ্রমণ করে আসতে পারি। সাহিত্য-সংস্কৃতি, ইতিহাস-ঐতিহ্যকে সমৃদ্ধ করার পাশাপাশি আমাদের আনন্দ ও জ্ঞানবিস্তারে অতুলনীয় ভূমিকা পালন করছে একুশের বইমেলা। 

একুশের বইমেলা আরেকবার সংগ্রহ করে দেয়া হলো

১৯৭১ সালে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পর হতে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গনে প্রতিবছর একুশে বইমেলা সংঘটিত হয়ে আসছে। বাঙালি সত্তার মর্মমূলে গাঁথা মহান একুশে ফেব্রুয়ারি তথা ভাষা আন্দোলনের অমর বহনকারী একুশে বইমেলা বাঙালির সংগ্রামী চেতনা এবং সংস্কৃতির স্বাতন্ত্র্যেরই এক গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ। ‘শহীদ দিবস’ হিসেবে জাতীয় মর্যাদায় এই দিনটি নানা অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে পালিত হয়। এই রাষ্ট্রের মানুষ ভাষা-শহীদদের শ্রদ্ধা জানানোর জন্য ও বইমেলার জন্য ব্যাকুল আগ্রহে অপেক্ষা করে থাকে। ১৯৯৯ সালে এই দিবসটি ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ায় এর বেড়ে গেছে বহুগুণ। সেই সঙ্গে একুশের বইমেলাও পেয়েছে আলাদা গৌরবদীপ্ত মাত্রা। পহেলা ফেব্রুয়ারি হতে মাসব্যাপী একুশে বইমেলা বেশ জাঁকজমকভাবে চলতে থাকে। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ গর্ভনমেন্টের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এই বইমেলার উদ্বোধন করেন। কয়েকশত পাব্লিশার তাদের জন্য বরাদ্দকৃত নিজ নিজ স্টল সাজিয়ে বই শো এবং বিক্রি করেন। হাজার হাজার দর্শক, শ্রোতা, ক্রয়কারী আনন্দমুখর পরিবেশে নানা ধরনের সুদৃশ্য এবং মূল্যবান বইয়ের সাথে, কবি ও প্রকাশকদের সঙ্গে অবগত হন। বই দেখে এবং বই ক্রয় করে তাদের মুখে হাসি ফুটে ওঠে। তারা এইখানে আলোচনা অনুষ্ঠান এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এনজয় করেন। আহার স্টলে বসেও কবি-লেখকদের সাথে আড্ডা দেন অনেকেই। ইনফরমেশন কেন্দ্র হতে প্রচার করা হয়ে যায় নতুন বই প্রকাশ করার সংবাদ, হারানো প্রজ্ঞাপন ইত্যাদি। মেলায় প্রবেশের সুসজ্জিত তোরণটি দৃষ্টিনন্দিত। বাইরের দেয়ালে ভাষা আন্দোলন এবং ভাষা-শহীদদের নানা প্রতিমূর্তি দেখার ভিড়। মেলার ভেতরে বাইরে সিকিউরিটির সুশৃঙ্খল ব্যবস্থা। সাংবাদিক এবং ক্যামেরার ভিড় নয়নে পড়ার মতো। ছোট বাচ্চা যুবক বৃদ্ধ সবার উপযুক্ত দেশপ্রেম, ইতিহাস, দর্শন, সাহিত্য, বিজ্ঞান, ভ্রমণবৃত্তান্তের ঝকঝকে বইয়ের অধিবেশন স্বাভাবিকভাবেই মন কাড়ে। একুশের বইমেলা বই কেনাকাটা এবং পাঠের হ্যাবিট গঠনে, পারস্পরিক ভাবের বিনিময়ে, প্রবীণ-নবীনদের সংযোগ রচনায় প্রকৃতই এক মিলনতীর্থ।


অমর একুশে গ্রন্থমেলা আরেকবার দেয়া হলো

আমাদের জীবনে একুশে ফেব্রুয়ারি গুরুত্বপূর্ণ ১টি দিন। এই দিনের অতীত বৃত্তান্ত আমাদের সংগ্রামী চেতনার ইতিহাস। এই সংগ্রামী চেতনাকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য ফেব্রুয়ারি মাসজুড়ে বিভিন্ন ধরনের ব্যবস্থা করা হয়। এর ভিতরে অন্যতম ব্যবস্থা হলো অমর একুশে বইমেলা। একুশে ফেব্রুয়ারিকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য বাংলা একাডেমি প্রতিবছর ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে একুশে বইমেলার ব্যবস্থা করে থাকে। বাংলা একাডেমি চত্বরে ফেব্রুয়ারি মাসজুড়ে এ বইমেলা চলে। বইমেলা উপলক্ষ্যে বই বিক্রেতা এবং প্রকাশকরা নানা সাজে বইয়ের স্টল বা দোকান সাজিয়ে বসেন। এইখানে নানারকম ধরনের বইয়ের সমাহার ঘটে। বইমেলা উপলক্ষ্যে অনেক নিউ বই মেলায় আসে। পুরোনো লেখকদের একসাথে নিউ লেখকদের বইও পাওয়া যায় এ মেলায়। ডেইলি বইয়ের আকর্ষণে বইপ্রেমিক মানুষেরা মেলা চত্বরে ছুটে আসেন। সাধারণ মানুষের পাশাপাশি লেখক, ভাষাবিদ এবং বরেণ্য সব ব্যক্তিত্ব বইমেলায় আসেন। কবি এবং পাঠকদের আনন্দঘন এক মিলনমেলা সৃষ্টি হয় এই মেলায়। এটা বাংলা একাডেমির একটি শ্রেষ্ঠ প্রচেষ্টা এবং আয়োজন। বইমেলার ফলে পাঠকেরা এক স্থান থেকেই তাদের পছন্দের বইগুলো কিনতে পারেন। এছাড়াও বই কেনার প্রতি সাধারণ মানুষের আগ্রহও সৃষ্টি হয়। এই কারণে এ ধরনের বইমেলার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। একুশে বইমেলা আমাদের ভিতরে সাহিত্য-সংস্কৃতিবোধ জাগ্রত করে। এই বইমেলা আজকাল আমাদের জাতীয় চেতনার সঙ্গে সম্পৃক্ত। ঢাকার বাইরে প্রতিবছর বইমেলার ব্যবস্থা করে বইমেলা এবং বইয়ের প্রতি সাধারণ মানুষের উৎসাহ বৃদ্ধি করা যেতে পারে।

শেষ লাইন
যে শিক্ষার্থীরা এই বছর এসএসসি, জেএসসি, বা ক্লাস ৮ পরীক্ষা দেবে তারা এই অনুচ্ছেদের লক্ষ্য দর্শক। পরীক্ষায় একটি উচ্চ গ্রেড অর্জন করতে, আপনাকে অনুচ্ছেদ রচনা ভালোভাবে লিখতে হবে। আপনি যদি এই লেখাটি মনোযোগ সহকারে পড়েন তবে আপনি একটি সফল ফলাফল আশা করতে পারেন। লেখাটি ভালো লাগলে অবশ্যই শেয়ার করুন আপনার ভাই বা বোনদেরকে, যেন তাড়াও অনুচ্ছেদ  সম্পর্কে একটি ভালো ধারনা পেতে পারে। নতুন আপডেটের জন্য আমাদের নিউজলেটারে আপনার ইমেল রাখতে পারেন।
 

আরও পড়ুনঃ

Post a Comment

Previous Post Next Post