ভাল সুইচ গিয়ারের বৈশিষ্ট্য গুলি কী কী?

 


গত আর্টিকেল এ আমি আলোচনা করেছি সুইচগিয়ার কি? কত প্রকার? এর উপাদানগুলো কি? এ বিষয়ে। আজ আমরা জানব, ভাল সুইচগিয়ারের বৈশিষ্ট্য গুলি কী কী? অর্থাৎবৈদ্যুতিক সিস্টেমে সুইচগিয়ার প্রটেকশনের গুরুত্ব নিয়ে। চলুন শুরু করি। 

সুইচগিয়ার কোনো একক বস্তুকে বুঝায় না। এটি বৈদ্যুতিক সিস্টেমের স্বাভাবিক কার্যকলাপের সংযোগকারী, বিচ্ছিন্নকারী, রক্ষণাবেক্ষণকারী, নিয়ন্ত্রণকারী, পাঠদানকারী ও ভারসাম্য রক্ষাকারী যন্ত্রপাতির সহঅবস্থানকে বুঝায়। তদুপরি এদের নিজের মধ্যে সংযোগ ব্যবস্থা ও আনুসঙ্গিক ইকুইপমেন্ট-এর সহঅবস্থানের ব্যবস্থাপনাকেও বুঝায়। 

সুইচগিয়ারের প্রধান উপাদান দু’টি। যথা- সার্কিট ব্রেকার ও রিলে। এছাড়াও অন্যান্য উপাদানগুলো হলো সি.টি, পি.টি, বাসবার, কন্টাক্টর ও ট্রিপিং মেকানিজম ইত্যাদি। 

বৈদ্যুতিক পাওয়ার সিস্টেমকে সম্পূর্ণভাবে ত্রুটিমুক্ত করা সম্ভব নয়। তবে ত্রুটির পরিমাণ এবং ত্রুটির তীক্ষ্ণতা কমিয়ে সিস্টেমে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতিসমূহকে ধ্বংসের হাত থেকে বাঁচানো যায়। অস্বাভাবিক অবস্থায় যেকোনো বিপদের হাত থেকে বৈদ্যুতিক সিস্টেমে ব্যবহৃত বিভিন্ন যন্ত্রপাতি তথা গোটা সিস্টেমকে রক্ষা করার জন্য খুব দক্ষ ও নিখুঁতভাবে অল্প সময়ে সুস্থ অংশকে ত্রুটিপূর্ণ অংশ হতে আলাদা করার ব্যবস্থাকে প্রটেকশন স্কিম বলে । 

ক্রমবর্ধমান বিদ্যুৎ শক্তির চাহিদা পূরণের জন্য বর্তমানে ব্যাপকভাবে সম্প্রসারণ সিস্টেম ব্যবহার করে ক্ষমতা বর্ধিত করা হচ্ছে। বর্ধিত ক্ষমতায় সিস্টেমকে নিপুণভাবে যথাসময়ে ত্রুটির কবল থেকে রক্ষা করার জন্য সুইচগিয়ার এবং প্রটেক্টিভ ডিভাইসসমূহের কার্যকরী ব্যবহার অপরিহার্য।

ভাল সুইচগিয়ারের বৈশিষ্ট্য গুলি কী কী?

১। সনাক্তকরণ (Selectivty) : সিস্টেমের ত্রুটিযুক্ত অংশকে শনাক্ত এবং বাকী অংশের সরবরাহ নিরাবছিন্ন রেখে শুধুমাত্র ত্রুটিযুক্ত অংশকে বিচ্ছিন্ন করার ক্ষমতাকে ঐ প্রটেক্টিভ সিস্টেমের Selectivity বলে।

২। সংবেদনশীলতা (Sensitivity) : পাওয়ার সিস্টেমে কোন ফল্ট সংঘটিত হলে স্বাভাবিক কারেন্টের চেয়ে অনেক (Huge) বেশি ফল্ট কারেন্ট প্রবাহিত হয়। একে Actuating quantity বলে। প্রটেক্টিভ সিস্টেমের রিলে (Relay) কর্তৃক খুবই সামান্য মানের এই Actuating quantity কে শনাক্ত করতে পারার ক্ষমতাকে Sensitivity বলে। 

৩। শ্বস্ততা (Reliability) : পূর্ব নির্ধারিত কন্ডিশনে প্রটেক্টিভ রিলে (Relay) অপারেট করতে পারার ক্ষমতাকে Reliability বলে।

৪। উচ্চ গতি (Speedy) : যত তাড়াতাড়ি সম্ভব প্রটেক্টিভ গিয়ার সাড়া দিয়ে যেন ত্রুটিযুক্ত অংশকে ত্রুটিহীন অংশ থেকে বিচ্ছিন্ন করতে পারে সে ব্যবস্থা থাকতে হবে। এতে উত্তম সেবাদান ও যন্ত্রপাতিসমূহের আয়ুষ্কাল ও নিরাপত্তা বৃদ্ধি পাবে। 

৫। স্থায়িত্বতা (Stability) : পাওয়ার সিস্টেমের ত্রুটিযুক্ত অংশকে সুস্থ অংশ হতে পৃথক করে সুস্থ অংশ পাওয়ার সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে পারার ক্ষমতাকে Stability বলে। 

৬। সরলতা (Simplicity) : প্রটেক্টিভ গিয়ার এবং ডিভাইসসমূহের গঠন ও অপারেশন সহজ-সরল হতে হবে। ব্যবহৃত ইকুইপমেন্টসমূহের বৈশিষ্ট্য এমন হতে হবে যেন সিস্টেমের ভবিষ্যতে পরিবর্তন ও পরিবর্ধনে কোনো বাধার সৃষ্টি না হয়। অর্থাৎ No interference with future expansion or alternation 

৭। সাশ্রয়ী (Economy) : সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর হলো ব্যবহার অনুযায়ী প্রটেক্টিভ স্কিমকে যথাসম্ভব দামে সাশ্রয়ী হতে হবে।

বৈদ্যুতিক সিস্টেমে সুইচগিয়ার প্রটেকশনের উপরোক্ত ৭টি গুরুত্ব অবশ্যই বিবেচনায় রাখতে হবে। আশা করি, ভাল সুইচগিয়ারের বৈশিষ্ট্য গুলি কী কী? প্রশ্নের উত্তরটি পেয়েছেন।

Post a Comment

Previous Post Next Post