কাঠ বাদাম এর উপকারিতা ও অপকারিতা

কাঠবাদাম কোলোন ক্যানসার প্রতিরোধে সাহায্য করে
কাঠবাদাম কোলোন ক্যানসার প্রতিরোধে সাহায্য করে

কাঠ বাদাম এর উপকারিতা। কাঠবাদাম খেতে কমবেশি সবাই ভালোবাসে। তবে অনেকের ধারণা কাঠবাদাম ওজন বাড়িয়ে দেয়। 

আপনি জানেন কি, নিয়মিত ডায়েটে কাঠবাদাম আপনার ওজন কমাতে সাহায্য করে। কাঠবাদাম স্ন্যাকস হিসেবে খাওয়ার জন্য অত্যন্ত চমৎকার একটি খাবার।

কাঠবাদামে রয়েছে ভিটামিন ই, ফসফরাস, ক্যালসিয়াম, সেলেনিয়াম, জিংক, কপার, আয়রন ও ম্যাগনেসিয়াম। পুষ্টিগুণে ভরপুর এই বাদাম কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে, হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়, শ্বাসতন্ত্রের সমস্যা কমায় এবং রক্তস্বল্পতা দূর করে। এটি চুল ও ত্বকের জন্য ভালো। 

বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রতিদিন একমুঠো করে কাঠবাদাম খেলে এই উপকারগুলো পেতে সাহায্য করবে আপনাকে। 

কাঠ বাদাম এর উপকারিতা

  • মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি
  • ক্যানসার প্রতিরোধে
  • হার্টের সুস্থতায় ভালো
  • ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করে
  • উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে
  • ওজন নিয়ন্ত্রণের সহায়ক
  • কোলেস্টেরলের মাত্রা কমে
  • হাড় ও দাঁত ভালো রাখে
  • পুষ্টির ঘাটতি দূর হয়
  • কোষ্ঠকাঠিন্য কমায়
  • কোষের ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়
  • শক্তি বাড়ায়
  • রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়

কাঠ বাদাম এর অপকারিতা

  • কাঠ বাদামে প্রচুর পরিমাণ ফাইবার রয়েছে।
  • ১০০ গ্রাম কাঠ বাদামে ২৫ মিলিগ্রাম ভিটামিন-ই রয়েছে।
  • কাঠ বাদামে প্রচুর পরিমাণে ফ্যাট এবং ক্যালোরি রয়েছে।
  • খুব বেশি কাঠ বাদাম খেলে দেহে টক্সিন জমতে থাকে। এবার চলুন বিস্তারিত জানি,

কাঠবাদামে থাকা ফসফরাস উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে

যেসব কারণে খাবেন কাঠবাদাম

উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে

কাঠবাদামে থাকা ফসফরাস উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। এর মধ্যে থাকা সোডিয়াম রক্তচাপের ওঠানামা নিয়ন্ত্রণ করে।

কোলেস্টেরলের মাত্রা কমে

কাঠবাদাম শরীরে বাজে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়। প্রতিদিনের ডায়েটে বাদামের অন্তর্ভুক্ত করলে হার্টের স্বাস্থ্য নিয়ে আর চিন্তায় থাকতে হবে না। আসলে বাদামে উপস্থিত বেশ কিছু কার্যকরী উপাদান শরীরে অন্দরে ভাল কোলেস্টরলের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই খারাপ কোলেস্টরলের মাত্রা কমতে শুরু করে। এছাড়া বাদামে প্রচুর পরিমাণ মনো-স্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে, থাকে ওমেগা-৬ ফ্যাটি অ্যাসিডও। কিন্তু কোনরকম ট্রান্স ফ্যাট থাকে না। ফলে হার্ট অ্যাটাক কিংবা স্ট্রোকেরও আশঙ্কা কম থাকে।

পুষ্টির ঘাটতি দূর হয়

বাদামে রয়েছে প্রায় ৩.৫ গ্রাম ফাইবার, ৬ গ্রাম প্রোটিন, ১৪ গ্রাম ফ্যাট সহ ভিটামিন ই, ম্যাঙ্গানিজ, ভিটামিন বি২, ফসফরাস এবং ম্যাগনেসিয়াম। এই সবকটি উপাদানই শরীরকে সুস্থ রাখতে বিশেষ প্রয়োজনে লাগে।

কোষের ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়

বাদামে থাকা প্রচুর মাত্রায় ভিটামিন ই শরীরের প্রতিটি কোণায় ছড়িয়ে থাকা কোষের কর্মক্ষমতার বৃদ্ধি ঘটানোর সঙ্গে সঙ্গে শরীরে যাতে কোনও ক্ষতের সৃষ্টি না হয়, সেদিকেও খেয়াল রাখে। ফলে বয়স বাড়লেও শরীরের উপর এর কোনও প্রভাব পরে না।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়

কাঠবাদাম অ্যালকেলাইন সমৃদ্ধ একটি খাবার। এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। এর মধ্যে রয়েছে ভিটামিন-ই রয়েছে অনেক শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এগুলো বিভিন্ন ধরনের রোগের হাত থেকে দেহকে সুরক্ষা দেয়।

ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করে

কাঠবাদাম ইনসুলিনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। গবেষণায় বলা হয়, খাবারের পর কাঠবাদাম খাওয়া ইনসুলিনের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে।

হার্টের সুস্থতায়

নিয়ম করে ভেজানো বাদাম খেলে হার্ট ভালো থাকে। কারণ কাঠবাদামে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন, পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ইত্যাদি উপকারী উপাদান থাকে। যা হার্টের কর্মক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। এতে থাকা ভিটামিন-ই হৃদরোগের ঝুঁকি কমায় এবং ম্যাগনেসিয়াম হার্ট অ্যাটাক প্রতিরোধে সাহায্য করে। এটি অ্যার্টারিকে ক্ষতিকর প্রদাহের হাত থেকে সুরক্ষা দেয়। নিয়মিত বাদাম খেলে হৃদযন্ত্র ভালো থাকে এবং ৫০% হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমে।

ক্যানসার প্রতিরোধে

কাঠবাদাম কোলোন ক্যানসার প্রতিরোধে সাহায্য করে। এটি কোলনকে ভালো রাখতেও কাজ করে।

মস্তিষ্কের কর্ক্ষমতা বৃদ্ধি

কাঠবাদামে থাকা পুষ্টিগুণ মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যকে ভালো রাখতে সাহায্য করে। এই বাদামে থাকে মস্তিষ্কের জন্য প্রয়োজনীয় দুটি পুষ্টিগুণ রিবোফ্লাভিন ও এল ক্যারনিটিন। এই উপাদান দুটি মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করে। এটি স্মৃতিভ্রম রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে। প্রতিদিন ৪-৬ টি কাঠ বাদাম ভিজিয়ে খেলে মস্তিষ্কের কাজের উন্নতি ঘটে। শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় উপকারী ফ্যাট উৎস হিসেবে কাঠবাদাম বিশেষ ভূমিকা রাখে। বাড়ন্ত শিশুদের বুদ্ধি বিকাশের জন্য কাঠবাদাম অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি খাবার। এছাড়া এতে আলঝেইমার হবার সম্ভাবনাও কম। 

খুব বেশি কাঠ বাদাম খেলে দেহে টক্সিন জমতে থাকে
খুব বেশি কাঠ বাদাম খেলে দেহে টক্সিন জমতে থাকে

কাঠ বাদাম এর অপকারিতা

কাঠ বাদাম অনেকের পছন্দের খাবার।  অনেকেই প্রচুর পরিমানে কাঠ বাদাম খেয়ে থাকি। কিন্তু আতিরিক্ত কাঠ বাদাম খেয়ে যে আপনারা নিজের ক্ষতি করছেন তা কি জানেন? চলুন কাঠ বাদাম খাওয়া সাইড ইফেক্ট গুলো জেনে নেই।

১. কাঠ বাদামে প্রচুর পরিমাণে ফ্যাট এবং ক্যালোরি রয়েছে। ১০০ গ্রাম কাঠ বাদামে ৫০ গ্রাম ফ্যাট রয়েছে। ফলে ওজন বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

২. কাঠ বাদামে প্রচুর পরিমাণ ফাইবার রয়েছে। তাই অত্যাধিক পরিমাণে কাঠ বাদাম খেলে কোষ্ঠকাঠিণ্যের সমস্যায় পড়তে পারেন। সে ক্ষেত্রে অনেক বেশি পরিমাণে পানি খেতে হবে।

৩. খুব বেশি কাঠ বাদাম খেলে দেহে টক্সিন জমতে থাকে। কারণ এতে হাইড্রোকার্বন অ্যাসিড রয়েছে। হাইড্রোকার্বন অ্যাসিড বেশি দেহে জমলে শ্বাসকষ্ট হয়, নার্ভের সমস্যা হয়, এমনকী মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।

৪. ১০০ গ্রাম কাঠ বাদামে ২৫ মিলিগ্রাম ভিটামিন-ই রয়েছে। যেখানে দিনে মাত্র ১৫ মিলিগ্রাম ভিটামিন-ই আমাদের প্রয়োজন। ভিটামিনের উৎস হিসাবে সারাদিন এর তিনগুণ কাঠ বাদাম একজন খেতেই পারেন। তাতে বিশেষ কোনও ক্ষতি হয় না। কিন্তু এটাও ঠিক যে কাঠ বাদামের সঙ্গে ভিটামিন-ই রয়েছে (যেমন ডিম, পালং শাক) এমন অনেক শাক-সবজিও আমরা খেয়ে থাকি। আর তাতেই আমাদের স্বাস্থ্যের ক্ষতি হয়। ডায়েরিয়া, দুর্বলতা এমনকী চোখও খারাপ হতে পারে। তাই দিনে ৪০ গ্রামের বেশি কাঠ বাদাম খাওয়া উচিত নয়।

টেগসঃ 

কাঠ বাদাম, কাঠবাদাম, কাঠ বাদাম এর উপকারিতা, কাঠ বাদাম এর অপকারিতা, Wood Nuts, Disadvantages of Wood Nuts, Advantages of Wood Nuts

Post a Comment

Previous Post Next Post