ব্যবসা পরিকল্পনা: শুরু করতে যে তিনটি প্রধান পরিকল্পনা করতেই হবে।

 

ব্যবসা পরিকল্পনা

আপনার নিজের ব্যবসা ছোট বা বড় অথবা শুরু করার প্রক্রিয়াটি যতই দ্রুত বা ধীরগতির হোক না কেন, ব্যবসা শুরু করার জন্য বেশ কয়েকটি ব্যবসা পরিকল্পনা আপনাকে নিতেই হবে।

ইনশা আল্লাহ আজকের লিখাতে আমি আপনার সাথে ব্যবসা শুরু করার আগে যে তিনটি প্রধান ব্যবসা পরিকল্পনা করতে হবে তা তুলে ধরার ইচ্ছা প্রকাশ করছি।

১। ব্যবসায়িক পরিকল্পনাঃ

ব্যবসায়িক পরিকল্পনা বিজনেস প্লান যে কোন ব্যবসার সফলতার মূল চাবিকাঠি। যে কেউ চাইলেই যে কোন প্রাতিষ্ঠানিক ডিগ্রি ছাড়াই ব্যবসা শুরু করতে পারে। তবে ব্যবসায় সফল হতে চাইলে আপনাকে অবশ্যই একটি বিজনেস প্লান লিখতেই হবে। আপনার ব্যবসা বেদে ব্যবসা পরিকল্পনা (Business Plan) সাজানো উচিত। সাধারণ এক পেইজের হতে পারে আবার ত্রিশ থেকে চল্লিশ পেজ বা তার থেকে বেশি হতে পারে। ব্যবসায় পরিকল্পনা (Business Plan) লেখার সময় কার জন্য এই প্ল্যান লিখছেন তা নির্ধারণ করতে হবে। হতে পারে আপনার নিজের জন্য কিংবা বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করার জন্য। আপনার উদ্দেশ্য যাই হোক না কেন, কিছু বিষয়ের উপর অবশ্যই ফোকাস করতে হবে।

যেমনঃ এক্সেকিউটিভ সামারি (Executive Summary), ভিশন (Vision), মিশন স্টেটমেন্ট (Mission Statement), অবজেক্টিভস (Objectives), প্রারম্ভিক মূলধন (Startup Capital), ব্যবসায়িক খরচ (Business Expenses) এবং প্রজেক্টেড ইনকাম (Projected Income)।

আরও পড়ুনঃ ব্যবসায় পরিবেশ কি? ব্যবসায় পরিবেশের উপাদানসমূহ যা শিল্পোদ্যোগে প্রভাবিত করে।

২। মার্কেটিং প্ল্যানঃ

আপনার ব্যবসা পরিকল্পনা (Business Plan) এর কাজ শেষ হয়ে গেলে, আপনাকে মারকেটিং প্লান (Marketing Plan) এর ফোকাস (Focus) করতে হবে। মারকেটিং প্লান (Marketing Plan) যা আপনাকে গ্রাহক পেতে এবং ব্যবসা থেকে উপার্জন শুরু করতে সাহায্য করবে। আপনার ন্যূনতম দুটি মার্কেটিং প্লান (Marketing Plan) থাকা দরকার। আপনার ব্যবসা প্রসারের জন্য একটি এবং বাজারে নতুন পণ্য বা সেবার পরিচিতি দেওয়ার জন্য আরেকটি।

আপনার প্রারম্ভিক মারকেটিং প্লান (Startup Marketing plan) এর মধ্যে কিছু বিষয় অবশ্যই অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

যেমনঃ মিশন স্টেটমেন্ট, টার্গেট মার্কেট, প্রতিযোগিতামূলক বিশ্লেষণ, বিক্রয় করার পদ্ধতি, পণ্যের দাম, প্রচার পরিকল্পনা, এবং মার্কেটিং বাজেট।

৩। আর্থিক পরিকল্পনাঃ

আপনার ব্যবসা পরিকল্পনা (Business Plan)-র জন্য অর্থনৈতিক পরিকল্পনা (Financial Plan)  তিনটি প্রধান ব্যবসা  পরিকল্পনার মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আপনার মনে রাখা উচিত যে বেশিরভাগ নতুন ব্যবসা লাভজনক হিসেবে গড়ে তুলতে কয়েক মাস, এমনকি কয়েক বছর লাগতে পারে। এর জন্য আপনাকে নিশ্চিত হতে হবে যে, আপনার কাছে যথেষ্ট টাকা রয়েছে, ব্যবসাটিকে চালানোর জন্য যতক্ষণ না পর্যন্ত ব্যবসা থেকে আপনি লাভ করতে পারছেন।

  • আরও পড়ুনঃ অর্থনৈতিক উন্নয়নের পাঁচটি ধাপসমূহ

আপনার ব্যবসা শুরু করার জন্য কত মূলধন প্রয়োজন হবে এবং সেই মূলধন কোথা থেকে আসবে তা নির্ধারন করে আপনার আর্থিক পরিকল্পনা শুরু করতে হবে। আপনার ব্যবসা পরিকল্পনা (Business Plan) শুরু করার সময় আপনার যে সমস্ত ব্যয় হবে, তার একটি তালিকা তৈরি করতে হবে। আপনার তালিকার কিছু আইটেমের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে কি কি সরঞ্জাম লাগবে, আসবাপত্র, সফটওয়্যার অফিস বা দোকানের অবস্থান লাইফের এবং অনুমতি ছাড়া বীমা ও কর্মচারীদের প্রশিক্ষণ বাবদ কত খরচ লাগতে পারে তার একটি স্পষ্ট ধারণা আপনার থাকতে হবে। এই প্রতিটি ব্যয়ের একটি আনুমানিক খরচ এর তালিকা তৈরি করতে হবে। এছাড়া তালিকায় আরও কয়েকটি বিষয় অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে।

যেমনঃ আপনার নিজের বেতন, অফিস বা দোকান ভাড়া, ইউটিলিটিস, ওয়েবসাইট বাবদ খরচ, ইন্টারনেট বিল, আইটি সেবা এবং ট্যাক্স এর সঠিক ধারণা পেতে আপনাকে যথেষ্ট ব্যয় করতে হবে। 

ব্যবসা শুরু করার জন্য তাড়াহুড়া করা যাবে না। তাড়াহুড়া না করে একটু সময় নিন এবং এ তিনটি প্রধান ব্যবসা পরিকল্পনা (Business Plan) শেষ করে ব্যবসা শুরু করুন। ব্যবসা-বাণিজ্য, শেয়ার-বাজার রিলেটেড লিখা পেতে আমাদের নিউজলেটার সাবস্ক্রাইব করে রাখতে পারেন। এছাড়া আপনি যদি ব্যবসা ধারনা, ব্যবসা পরামর্শ ও সফলতা নিয়ে বিস্তারিত জানতে চান তাহলে আমাদের ওয়েবসাইট এ  রেগুলার ভিজিট করার আমন্ত্রণ দিয়ে আজকের মত বিদায় জানাচ্ছি.

Post a Comment

Previous Post Next Post